পুলিশের ডিজিটাল সাফল্যে ৩ মাস পর আপন নীড়ে ফিরলো শাহজাদপুরের ১১ বছর বয়সী সাথী।

শামছুর রহমান শিশির শাহজাদপুর :

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষে
বর্তমান সরকার তথ্য প্রযুক্তি খাতের
ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে এবং
ওই খাতের আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী
করে তুলতে ব্যাপক কর্মপ্রচেষ্টা
অব্যাহত রেখেছে। ইতিমধ্যেই
পাবলিক সার্ভিসের সকল পর্যায়ে তথ্য
আদান প্রদানের মাধ্যমকে
ডিজিটালাইজড্ করা হয়েছে। তেমনি
‘বাংলাদেশ পুলিশ নিউজ’ নামক ওয়েব
পোর্টালে এবং বিশ্বখ্যাত
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-
এ শাহজাদপুর থানার এসআই ফরিদের
নিজ প্রোফাইলে চট্টগ্রামে
গৃহপরিচারিকার কাজ করাবস্থায় ৩
মাস ধরে নিখোঁজ শাহজাদপুরের ১১
বছর বয়সী শিশু সাথী’র ছবিসহ পোস্ট
দেয়ার পর অবশেষে শিশুটির সন্ধান
মিলেছে। গতকাল বুধবার ফেসবুকের
সূত্র ধরে শাহজাদপুর থানা পুলিশ
তাকে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করে
থানায় নিয়ে এসেছে। ফলে দীর্ঘদিন
পরে হলেও আপন নীড়ের ঠিকানায়
ফিরেছে হতদরিদ্র পরিবারের অসহায়
এক শিশুকন্যা । বিজ্ঞ মহলের মতে,‘
সরকার দেশকে ডিজিটাল করতে তথ্য
প্রযুক্তি খাতসহ বহুমূখী খাতে যে উন্নয়ন
কর্মপরিকল্পনা ক্রমান্বয়ে বাস্তবায়ন
করে যাচ্ছে, তারই সুফল হিসেবে
শাহজাদপুর থানা পুলিশের বলিষ্ঠ
কর্মপ্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম থেকে ৩ মাস
পূর্বে হারিয়ে যাওয়া শিশু সাথীকে
উদ্ধার সম্ভব হয়েছে। শাহজাদপুর থানা
পুলিশের অভাবনীয় ওই সাফল্যকে
তারা ডিজিটাল সফলতা হিসেবে
আখ্যায়িত করেছেন।’
গতকাল বুধবার দুপুরে শাহজাদপুর থানার
অফিসার ইনচার্জ রেজাউল হক,
পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম ও
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও)
থানার উপ-পরিদর্শক ফরিদের সাথে
সাথীকে উদ্ধারের বিষয়ে আলাপ হয়।
আলাপকালে তারা জানিয়েছেন, ‘
গত ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জনৈক মেহেদি
হাসানের বাসায় কাজ করা অবস্থায়
রাগ করে সাথী ওই বাসা থেকে
পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সাথীর পিতা
হুরমুজ আলী বাদী হয়ে ৩ জনকে
বিবাদী করে সিরাজগঞ্জ নারী ও
শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল জজ
আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করেন
(পি-৮৫৯/১৬)। মামলার তদন্তকারী
কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক ফরিদ
নিখোঁজ সাথীর সার্বিক বর্ণনা
দিয়ে তার সন্ধান পেতে চট্টগ্রামের
থানার সাধারণ ডায়েরির
কপি,পোস্টারিংয়ের ছবিসহ ওয়েব
পোর্টাল ‘বাংলাদেশ পুলিশ নিউজ’ ও
তার ব্যক্তিগত প্রোফাইলে একটি
সচিত্র পোস্ট দেন এবং বন্ধুদের শেয়ার
করতে বলেন। ফেসবুকের মাধ্যমে
চট্রগ্রামে মেঘনা ওয়েল কোং-এ
কর্মরত আইয়ুব শিকদার এ বিষয়ে জানতে
পারেন এবং তার সহকর্মী একেএম
আক্তার কামালের হেফাজতে থাকা
শিশুটির চেহারা ও পোস্টকৃত ছবির
সাদৃশ্য খুঁজে পান। এ বিষয়ে স্থানীয় এক
সংবাদকর্মী মোবাইল ফোনে
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই
ফরিদকে বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত
করেন। পরে শাহজাদপুর থানার
পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলামের
নির্দেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই
ফরিদ গত সোমবার রাতে সাথীকে
উদ্ধারে চট্টগ্রামের অভিমূখে
রওয়ানা হন। সেখানে আইনগত সকল
প্রক্রিয়া শেষ করে অবশেষে
সাথীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে
আসা হয় । এদিকে, অন্ধের যষ্ঠিকে
ফিরে পেয়ে পিতা হুরমুজ ও মা
কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং
শাহজাদপুর থানা পুলিশের প্রতি গভীর
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে
সাথী জানায়,‘৩ মাস চট্টগ্রামের
বাসায় কাজ করার পর বাড়ি ফিরে
আসতে চেয়েছিলো। বাড়ির কর্তা
মেহেদি হাসান তাকে কোরবানীর
ঈদের পর বাড়িতে পাঠানোর কথা
বলেছিলেন। কিন্তু ‘কোমলমতি মন,
মানে না বারণ’-এর মতোই গত ১৬ আগস্ট
ওই বাসা থেকে আমি পালিয়ে অচীন
রাস্তায় ঘুরপাক খেতে থাকি।
সেখানে কাভার্ড ভ্যানের হেলপার
সহৃদ জনৈক রিয়াজ রাস্তা থেকে
উদ্ধার করে আমাকে একেএম
কামালের হেফাজতে দেন।’ একেএম
কামাল বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পাচলাইশ
থানাকে অবহিতপূর্বক সাথীকে নিজ
বাড়িতে রাখেন। শেষে কামাল
সাহেবের সহকর্মী আইয়ুব শিকদারের
কাছে জানতে পেরে শাহজাদপুর
থানা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ
চট্টগ্রাম থেকে সাথী’কে উদ্ধার করে
থানায় নিয়ে আসে এবং ফিরিয়ে
দেয় ৩ মাস পূর্বে হারিয়ে যাওয়া
তার আপন নীড়, আপন স্বজন ও আপন ভূবন !

পোস্ট সময়ঃ সমবার ১৭/১১/২০১৬ 8:00pm 

Post a Comment

0 Comments