১৭ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ এ মাসেই

অনলাইন প্রতিবেদন/

চাকুরির খবরঃ সরকার  প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক মাসের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পাচ্ছেন। পুল ও প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের মধ্য থেকে এ নিয়োগ
দেয়া হচ্ছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ
ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের (ডিপিইও) নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এ
নিয়োগের পরও সহকারী শিক্ষকের অন্তত ১৭ হাজার পদ শূন্য থাকবে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে ১৫
হাজারের বেশি। সহকারী শিক্ষক
নিয়োগে সরকারের এ সিদ্ধান্তে পুল-
প্যানেলের এসব প্রার্থীর বিগত ৪
বছরের বেশি দিনের অপেক্ষার অবসান
হতে যাচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন জেলা
শিক্ষা অফিসে নিয়োগের বিনিময়ে
মোটা অংকের অর্থ দাবির অভিযোগ
উঠেছে।

এ কারণে নিয়োগ প্রত্যাশীদের মধ্যে
অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অনেকেই ‘ঘুষ’
দেয়া থেকে বাঁচতে প্রভাবশালীদের
কাছে ধরনা দিচ্ছেন। বেনামে মন্ত্রণালয়
এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে
(ডিপিই) অভিযোগও জমা পড়ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের
অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান
যুগান্তরকে বলেন, পুল-প্যানেলের অবশিষ্ট
প্রার্থীদের ৩০ মার্চের মধ্যে নিয়োগ
দিতে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
আদালতের রায়ের আলোকে এই কাজটি
করলেও একে (রায়) শিক্ষকের শূন্যপদ
পূরণের উপায় হিসেবে আমরা নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এ নিয়োগের নামে
যদি কেউ কোথাও অর্থ নেন বা দাবি
করেন- প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর
বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি
লিখিতভাবে প্রমাণ দেয়ার জন্য
ভুক্তভোগীদের অনুরোধ জানান।

বর্তমানে ৬৫ হাজার নতুন-পুরাতন সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় অর্ধ লাখ
শিক্ষকের পদ খালি আছে। এর মধ্যে ১৬
হাজার প্রধান শিক্ষকের, বাকিরা
সহকারী শিক্ষক। এর মধ্যে গত আগস্টে
৩৪তম বিসিএস থেকে ৮৯৮ জনকে প্রধান
শিক্ষকের পদে নিয়োগের সুপারিশ করা
হয়েছে। এখন সহকারী শিক্ষকের পদ
পূরণের উদ্যোগ নেয়া হল।

ডিপিইওদের কাছে প্রাথমিক শিক্ষা
মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে
নিয়োগে পাঁচটি নির্দেশনা দেয়া
হয়েছে। এতে বলা হয়, রেজিস্টার্ড
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
প্যানেলভুক্ত অবশিষ্ট ৭ হাজার ২১৮ জন
এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
পুলভুক্ত ১০ হাজার ২৫৫ জনকে নিয়োগের
জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।
এতে প্যানেলভুক্তদের বিদ্যালয়বিহীন
এলাকায় স্থাপিত নতুন ও জাতীয়করণকৃত
স্কুলে এবং পুলভুক্তদের সরকারি স্কুলে
নিয়োগ করতে বলা হয়। নিয়োগের
ক্ষেত্রে প্রার্থীর নিজ এলাকা ও
উপজেলা অগ্রাধিকার দিতে হবে। শূন্য
পদ না থাকলে পর্যায়ক্রমে পার্শ্ববর্তী
উপজেলা, জেলা বা বিভাগে দিতে
হবে। প্যানেলের মেয়াদ গত বছরের ৯
এপ্রিল শেষ হওয়ায় ২ বছর (মেয়াদ)
বাড়ানো হয়।

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা শিক্ষা
কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান যুগান্তরকে
মোবাইল ফোনে জানান, পুল ও
প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগের
লক্ষ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার
কার্যালয় থেকে শূন্য পদের তালিকা
চাওয়া হয়েছে। আমরা তা পাঠিয়ে
দিয়েছি। জেলা থেকে এখন শিক্ষক
নিয়োগ দেয়া হবে।

রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
নিয়োগের লক্ষ্যে ২০১০ সালের ২১
এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরকার।
তখন আবেদনকারীদের পরীক্ষা নিয়ে
২০১২ সালের ৮ এপ্রিল ৪২ হাজার ৬১১
জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়।
তাদের মধ্যে তখন ১০ হাজার ৫১৪ জন
নিয়োগ পান। বাকি ২৮ সহস াধিকের
নিয়োগ ঝুলে ছিল। পরে প্রার্থীদের
মামলার কারণে গতবছর কিছু নিয়োগ পান।

বাকি ৭ হাজার ২১৮ জন নিয়োগ পাচ্ছেন
এখন। অপরদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
নিয়োগের লক্ষ্যে ২০১১ সালের ৪ আগস্ট
বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নেয়া পরীক্ষায় ২৭
হাজার ৭২০ জন উত্তীর্ণ হন। তাদের মধ্য
থেকে তখন ১২ হাজার ৭০১ জনকে শূন্য
পদে নিয়োগ দেয়া হয়। বাকি ১৫ হাজার
১৯ জনকে এক নীতিমালার আলোকে
পুলভুক্ত করে রাখা হয়। কথা ছিল, পুলের
শিক্ষকরা উপজেলায় সংযুক্ত থাকবেন।
যখন যে স্কুলে শিক্ষকের সংকট দেখা
দেবে- সেখানে সাময়িকভাবে পদায়ন
করা হবে। কিন্তু এক সময়ে এসব প্রার্থীর
প্রত্যাশা বেড়ে যায়। ২০১৪ সালের ১৪
সেপ্টেম্বর সরকার সহকারী শিক্ষক পদে
নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিলে পুলভুক্তরা
মামলা করেন।

স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে বিজ্ঞপ্তি
দেয়ায় এর (বিজ্ঞপ্তি) বৈধতা
চ্যালেঞ্জ করা হয় এতে। এরপর আরও
একাধিক মামলা হয়। এসব মামলার রায়ের
আলোকেই এখন নিয়োগ পাচ্ছেন
পুলভুক্তরা।

এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা
অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক ড.
আবু হেনা মোস্তফা কামাল যুগান্তরকে
বলেন, স্কুলে শিক্ষকের অনেক শূন্যপদ
আছে। এবার পুল-প্যানেলের কোনো
প্রার্থী আর নিয়োগবঞ্চিত থাকবেন না।

(সূত্রঃ ওয়ান নিউজ বিডি)

Post a Comment

0 Comments