অনলাইন ডেস্ক|
তথ্য প্রযুক্তিঃ ইউটিউবে চ্যানেল খুলে তাতে ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে অর্থ আয় করা যায়। এত দিন ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে খুব সহজে অর্থ আয় করার সুযোগ থাকলেও এবারে যথেষ্ট কঠোর হচ্ছে গুগল কর্তৃপক্ষ। ইউটিউব
গুগলের ভিডিও সেবা।
এত দিন ইউটিউবে চ্যানেল খুলে এক ভিডিওর নামে অন্য ভিডিও দিয়ে দর্শকদের ধোঁকা দেওয়ার প্রবণতা ছিল। ‘ভিউ’ বাড়ানোর চেষ্টা হিসেবে অনেক চ্যানেলেই আপত্তিকর কনটেন্ট দেখা গেছে। অনেক সময় ভিডিওর থাম্বনেইলে এক আকর্ষণীয় বিষয়, কিন্তু ভেতরে থাকে বিরক্তিকর ভিডিও। এতে যেমন দর্শক ওই ভিডিওতে বিরক্ত হন, তেমনি বিরক্ত হন বিজ্ঞাপনদাতারা।
বৃহস্পতিবার থেকে গুগল কর্তৃপক্ষ
ইউটিউব চ্যানেলগুলোর জন্য বিশেষ
পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া চালু করেছে। এ ছাড়া
যেসব চ্যানেলে ১০ হাজারের কম ভিউ
রয়েছে, সেগুলোতে বিজ্ঞাপন দেখানো
বন্ধ করে দিয়েছে। গুগল কর্তৃপক্ষ বলছে,
আপত্তিকর ও পাইরেটেড ভিডিও প্রদর্শন করে অর্থ আয়ের সুবিধা বন্ধ করতে এ উদ্যোগ নিয়েছে তারা।
এর কারণ হচ্ছে আপত্তিকর কনটেন্ট বা ভিডিওর জন্য গুগলের ইউটিউবে বিজ্ঞাপন বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ড। বিষয়টি নিয়ে গুগল বেশ অস্বস্তিতে রয়েছে।
ব্র্যান্ডগুলো মনে করছে, ইউটিউবের
আপত্তিকর ভিডিওতে তাদের বিজ্ঞাপন
দেখানো হলে মানুষ ওই ভিডিওর সঙ্গে
তাদের ব্র্যান্ডের তুলনা করবে।
বিজ্ঞাপন দেখানোর নতুন সিদ্ধান্ত সম্পর্কে
পণ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট
এরিয়েল বারডিন বলেন, ‘নতুন মান নির্ধারণ করার ফলে কোনো চ্যানেলের বৈধতা দেওয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে যথেষ্ট তথ্য থাকবে।
কমিউনিটি গাইডলাইন বা বিজ্ঞাপন নীতিমালা মানা হচ্ছে কি না, সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। বারডিন বলেছেন, যাঁরা অর্থ আয় করার লক্ষ্যে নতুন করে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করবেন, (নিউ
ক্রিয়েটরস) তাঁদের জন্য পর্যালোচনা প্রক্রিয়া চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে গুগলের। যখন কোনো চ্যানেলের ভিউ বা ভিডিও দর্শক ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে, তখন ওই চ্যানেলের ভিডিওগুলো পর্যালোচনা করে দেখা হবে। যদি
ওই ভিডিও ইউটিউবের কোনো নীতিমালা ভঙ্গ করে, তখন আর বিজ্ঞাপন পাবে না।
এই প্রক্রিয়ার ফলে এখন থেকে শুধু প্রকৃত ও নিয়মনীতি অনুসরণকারী ভিডিও নির্মাতারাই আয়ের সুযোগ পাবেন।
গুগলের এখন বিজ্ঞাপনদাতাদের খুশি করা ও ভিডিও নির্মাতাদের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে হবে।
গুগল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি নতুন
একধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত সিস্টেম তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে ইউটিউব ভিডিও নীতিমালা মানতে বাধ্য করা হবে। এতে বিজ্ঞাপনদাতাদের চোখে আপত্তিকর ভিডিওগুলোকে বাছাই করতে সুবিধা হবে। এতে বিজ্ঞাপনদাতাদের পছন্দ প্রতিফলিত হবে।
এ ছাড়া বিজ্ঞাপনদাতাদের বিজ্ঞাপন যাতে
কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত চ্যানেলে পোস্ট না
হয়, তা খেয়াল করতে থার্ড পার্টির সঙ্গে কাজ করবে গুগল। ইউটিউব ভিডিওতে যাতে চরমপন্থী বিষয়বস্তুর সঙ্গে বিজ্ঞাপন না দেখায়, সে ভয়ে বিজ্ঞাপনদাতারা পিছু হটছে। তাই বিজ্ঞাপনদাতাদের হাতে অধিকতর নিয়ন্ত্রণ দিচ্ছে গুগল।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে টাইমস
নিউজপেপার অব লন্ডন ইউটিউব থেকে বিজ্ঞাপন সরিয়ে নিলে প্রথম ধাক্কা খায় গুগল। পরে এটিঅ্যান্ডটি, ভেরিজনের মতো প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপন সরিয়ে নিয়েছে। এরপর থেকে বিজ্ঞাপন নীতিমালার ক্ষেত্রে কঠোর
হয়েছে গুগল। এখন তাই ইউটিউব চ্যানেল খুলে অর্থ আয় করতে গেলে প্রকৃত কনটেন্ট সরবরাহ করে দর্শক টানতে হবে। তা না হলে চ্যানেলের জন্য অর্থ দেবে না গুগল।
তথ্যসূত্র: এএফপি।
0 Comments
[আর্টিকেলটি ভালো লাগলে সেয়ার করুন]