রংপুর জেলা

রংপুর বিভাগের আর্টিকেলটি পড়তে http://nazirbartabd.blogspot.com/2017/12/blog-post.html লিংকে যান।

রংপুর জেলা
বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের একটি জেলা
এই নিবন্ধটি বাংলাদেশের জেলা রংপুর সম্পর্কিত। অন্য ব্যবহারের জন্য, দেখুন রংপুর ।
রংপুর জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল ও বিভাগীয় শহর।

বাংলাদেশে রংপুর জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৫°৪৪′ উত্তর ৮৯°১৫′ পূর্ব / ২৫.৭৩৩° উত্তর ৮৯.২৫০° পূর্ব
দেশঃ বাংলাদেশ
বিভাগঃ রংপুর বিভাগ
আয়তন
• মোটঃ ২৪০০.৫৬ কিমি২ (৯২৬.৮৬ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
• মোট
২৯,৯৬,৩৩৬
• ঘনত্ব
১২০০/কিমি ২ (৩২০০/বর্গমাইল)
স্বাক্ষরতার হার
• মোট
৪৮.৫%
সময় অঞ্চলঃ বিএসটি (ইউটিসি+৬ )
পোস্ট কোডঃ ৫৪০০
ওয়েবসাইট
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট http://www.rangpur.gov.bd

ভৌগোলিক সীমানা
--------------------------->>
রংপুর জেলা ২৫৹০৩˝থেকে ২৯৹৩২˝ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত । মোট আয়তন ২৩০৮ বর্গ কিমি । আটটি উপজেলা , ইউনিয়ন ৩৮টি, ১৪৫৫টি মৌজা এবং ১ টি সিটি কর্পোরেশন ৩ টি পৌরসভা নিয়ে রংপুর জেলা গঠিত।রংপুর জেলার উত্তরে লালমনিরহাট ও তিস্তা নদী, দক্ষিণে গাইবান্ধা ও দিনাজপুর জেলা , পূর্বে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলা এবং পশ্চিমে দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা অবস্থিত। তিস্তা নদী উত্তর ও উত্তর পূর্ব সীমান্তকে লালমনিরহাট এবং কুড়িগ্রাম জেলা থেকে আলাদা করেছে।

রংপুর জেলাকে বৃহত্তর বঙ্গপ্লাবন ভূমির অংশ মনে করা হয়। কিন্তু ভূতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে এর গঠন দেশের অন্যান্য জেলা থেকে আলাদা। এ জেলার ভূগঠন অতীতে উত্তরাঞ্চল প্রবাহমান কযয়েকটি নদীর গতিপথ পরিবর্তন এবং ভূকম্পনজনিত ভুমি উত্তোলনের সাথে জড়িত। তিস্তা নদীর আদি গতিপথ পরিবর্তন ছিল রংপুর জেলার ভূমি গঠনের ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ। তিস্তা নদী ১৭৮৭ সালের পূর্বে গঙ্গানদীর একটি উপনদী ছিল। তিস্তা সিকিম বা হিমালয়ে পরিচিত রাংগু ১৭৮৭ সাল পর্যন্ত দিনাজপুর জেলার নিকট আত্রাই এর সাথে মিলিত হয়ে নিম্ন গঙ্গা নদীতে পতিত হতো। ১৮শ শতকে তিস্তা, আত্রাই নদীর পথ ধরে গঙ্গা ও বিছিন্ন কিছু খাল বিলের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র, উভয় কিছু নদীর সাথে ঋতু ভিত্তিক সংযোগ করত। অপর নদী
ধরলা তিস্তা থেকে নিম্ন হিমালয় অঞ্চল বৃহত্তর রংপুর জেলার পূর্ব দিক দিয়ে (বর্তমান কুড়িগ্রাম) ব্রহ্মপুত্র নদে মিলিত হয়েছে। ঘাঘট এ জেলার অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ নদ । ঘাঘট তিস্তার গর্ভ থেকে উৎপন্ন হয়ে রংপুর জেলার মধ্য দিয়ে দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলা অতিক্রম করে করতোয়া নদীতে পতিত হয়। আত্রাই নদী এ সময় করতোয়া ও গঙ্গার মধ্যে সংযোগ রক্ষা করত।

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
--------------------------------->>
রংপুর জেলায় ৮টি উপজেলা রয়েছে; এগুলো হলোঃ

কাউনিয়া ,
গংগাচড়া ,
তারাগঞ্জ ,
পীরগঞ্জ ,
পীরগাছা ,
বদরগঞ্জ ,
মিঠাপুকুর এবং
রংপুর সদর।

নামকরণের ইতিহাস
-------------------------------->>
রঙ্গপুরের সংবাদ পত্র রঙ্গপুর দর্পন , যার তারিখ ২১ নভেম্বর ১৯২১ নামকরণের ক্ষেত্রে লোকমুখে প্রচলিত আছে যে পূর্বের ‘রঙ্গপুর’ থেকেই কালক্রমে এই নামটি এসেছে। ইতিহাস থেকে জানা যায় যে উপমহাদেশে ইংরেজরা নীলের চাষ শুরু করে। এই অঞ্চলে মাটি উর্বর হবার কারনে এখানে প্রচুর নীলের চাষ হত। সেই নীলকে স্থানীয় লোকজন রঙ্গ নামেই জানত। কালের বিবর্তনে সেই রঙ্গ থেকে রঙ্গপুর এবং তা থেকেই আজকের রংপুর। অপর একটি প্রচলিত ধারণা থেকে জানা যায় যে রংপুর জেলার পূর্বনাম রঙ্গপুর। প্রাগ জ্যোতিস্বর নরের পুত্র ভগদত্তের রঙ্গমহল এর নামকরণ থেকে এই রঙ্গপুর নামটি আসে। রংপুর জেলার অপর নাম জঙ্গপুর । ম্যালেরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব থাকায় কেউ কেউ এই জেলাকে যমপুর বলেও ডাকত। তবে রংপুর জেলা সুদুর অতীত থেকে আন্দোলন প্রতিরোধের মূল ঘাঁটি ছিল। তাই জঙ্গপুর নামকেই রংপুরের আদি নাম হিসেবে ধরা হয়। জঙ্গ অর্থ যুদ্ধ, পুর অর্থ নগর বা শহর । গ্রাম থেকে আগত মানুষ প্রায়ই ইংরেজদের অত্যাচারে নিহত হত বা ম্যালেরিয়ায় মারা যেত। তাই সাধারণ মানুষ শহরে আসতে ভয় পেত। সুদুর অতীতে রংপুর জেলা যে রণভূমি ছিল তা সন্দেহাতীত ভাবেই বলা যায়। ত্রিশের দশকের শেষ ভাগে এ জেলায় কৃষক আন্দোলন যে ভাবে বিকাশ লাভ করে ছিল তার কারণে রংপুরকে লাল রংপুর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল।

অর্থনীতি
--------------->>

টাউন হল

রংপুর অঞ্চলকে তামাকের জন্য বিখ্যাত বলা হয়।এখানে উৎপাদিত
তামাক দিয়ে সারা দেশের চাহিদা মেটানো হয়। রংপুরে প্রচুর পরিমাণ ধান-পাট-আলু ও আম (হাড়ি ভাঙ্গা) উৎপাদিত হয়। যা স্থানীয় বাজার তথা সারাদেশের বাজারে সমান হারে সমাদৃত।

শিল্পপ্রতিষ্ঠান

রংপুর জেলার কেল্লাবন্দ নামক স্থানে বিসিক শিল্প নগরী গড়ে উঠেছে। সেখানে বিভিন্ন ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে। যেমনঃ আর,এফ,এল লিঃ,প্রাইম সনিক গ্রুপ, মিল্ক ভিটা বাংলাদেশ,আরডি মিল্ক, বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজ। এছাড়া হারাগাছ নামক স্থানে বিড়ি (সিগারেট) তৈরির একাধিক কারখানা। রংপুর শহরের আলম নগর নামক স্থানে আছে আর, কে ফ্যান কারখানা। বদরগঞ্জ উপজেলার
শ্যামপুর নামক স্থানে গড়ে উঠেছেঃ শ্যামপুর চিনিকল লিমিটেড, রংপুর ডিষ্টিলারিজ এন্ড কেমিক্যাল কোঃ লিঃ।

পত্র-পত্রিকা
------------------>>
দৈনিক[২] :
দাবানল (১৯৮০)
যুগের আলো (১৯৯২)
পরিবেশ (১৯৯৪)
রংপুর (১৯৯৭)
সাপ্তাহিক [২] :
অটল (১৯৯১)
রংপুর বার্তা (১৯৯৬)
অবলুপ্ত: রঙ্গপুর বার্তাবহ (১৮৪৭)
রঙ্গপুর দর্পণ (১৯০৭)
রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা (১৯০৫)
রঙ্গপুর দিক প্রকাশ (১৮৬১)
উত্তর বাংলা (১৯৬০)
প্রভাতী (১৯৫৫)
সাপ্তাহিক রংপুর (১৯৯৬)
বজ্রকণ্ঠ (পীরগঞ্জ)

চিত্তাকর্ষক স্থান
-------------------------------->>

'প্রজন্ম', মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য, রংপুর কারমাইকেল কলেজ
তাজহাট রাজবাড়ী

1. কারমাইকেল কলেজ ,
2. তাজহাট রাজবাড়ী ,
3. ভিন্নজগত,
4. রংপুর চিড়িয়াখানা,
5. পায়রাবন্দ,
6. ঘাঘট প্রয়াস পার্ক ,
7. চিকলির পার্ক ,

মিঠাপুকুর উপজেলার রানিপুকুর ও লতিবপুর ইউনিয়নের নিঝাল, ভিকনপুর, মামুদপুর তিন গ্রামের সীমানায় অবস্থিত মোঘল আমলের "নির্মিত তনকা মসজিদ"। একই উপজেলার ময়েনপুর ইউনিয়নের ফুলচৌকির মোঘল আমলের নির্মিত মসজিদ, সুড়ুং পথ, শালবনের ভিতরের মন্দির, সহ অনেক পুরাতন স্থাপনা আছে এই গ্রামে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
-------------------------------->>

রংপুর জিলা স্কুল
শিক্ষা ব্যবস্থার দিক থেকে রংপুর জেলা প্রাচীন কাল থেকেই বাংলাদেশের একটি অন্যতম জেলা। এখানে গড়ে উঠেছে অনেক প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই জেলায় ২৮২টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭২২ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৮টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৯৩টি বেসরকারী সংস্থা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বিদ্যালয় এবং ৩২০টি মাদ্রাসা। তারমধ্যে অনতম্য গুলো হলঃ

রংপুর জিলা স্কুল
রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
রংপুর ক্যাডেট কলেজ
কালেক্টরেট স্কুল ও কলেজ, রংপুর
রংপুর সরকারি কলেজ
বেগম রোকেয়া সরকারী মহিলা কলেজ
কারমাইকেল কলেজ
পুলিশ লাইন্স স্কুল ও কলেজ, রংপুর
কালেক্টরেট স্কুল ও কলেজ, রংপুর
পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউট, রংপুর
রংপুর মেডিকেল কলেজ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

চিকিৎসা সুবিধা
-------------------------------->>

রংপুর বিভাগ এর মধ্যে রয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ।এটি একটি সরকারী মেডিকেল কলেজ। অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে রয়েছে শিশু হাসপাতাল,বক্ষ হাসপাতাল ও কলেরা হাসপাতাল।বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টিয়ান মিশনারি হাসপাতাল,রংপুর ডেন্টাল কলেজ এবং কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব
--------------------->>
1. বেগম রোকেয়া 
বাংলার মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত
হেয়াত মামুদ , মধ্যযুগের কবি

2. আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি ও ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি

3. হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, 
বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি

4. এম এ ওয়াজেদ মিয়া , খ্যাতনামা পরমাণু বিজ্ঞানী

5. আনিসুল হক , 
লেখক, নাট্যকার ও সাংবাদিক

6. নাসির হোসেন,
বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার

7. সানজিদা ইসলাম ,
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সদস্য

8. মাহবুব আলম, 
সাহিত্যিক

9. রফিকুল হক , ছড়াকার, সাংবাদিক

10. চৌধুরী খালেকুজ্জামান , মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, আয়কর আইনজীবি, সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ।

11. খান বাহাদুর শাহ্ আব্দুর রউফ , সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ (১)
তাজহাট রাজবাড়ী রংপুর

(২)
তথ্যসূত্র ---->>
(১) https://bn.m.wikipedia.org/wiki/রংপুর_জেলা
(২) Daily Sun

Post a Comment

0 Comments